আইনজীবী রজত দে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত স্ত্রী অনিন্দিতা পাল দে কে ভারতীয় দণ্ডবিধির 302 ও 201 ধারা অনুযায়ী যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি ঘোষণা করলো বারাসাত আদালত।

প্রসঙ্গত আইনজীবী রজত দে হত্যায় গত সোমবার তার আইনজীবী স্ত্রী অনিন্দিতা পাল দে কে দোষী সাব্যস্ত করে বারাসাত আদালত। সকলেই তাকিয়ে ছিল বহু চর্চিত এই রায়ের দিকে। আদালতে সকালেই চলে আসেন মৃত রজতের বাবা সমীর দে ও তার আইনজীবী বন্ধুরা। আগে থেকেই তারা অনিন্দিতার ফাঁসির দাবিতে সরব হয়েছিলেন। আজ বুধবার বারাসত আদালতে ফাস্ট ট্র্যাক থার্ড কোর্টের বিচারক সুজিত কুমার ঝা এই খুনের মামলায় অভিযুক্ত স্ত্রী অনিন্দিতা কে ভারতীয় দণ্ডবিধির 302 ও 201 ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি ঘোষণা করেন।




২০১৮ সালের ২৫ নভেম্বর নিউটাউনের DB ব্লকের ফ্লাট থেকে নিথর দেহ উদ্ধার হয় কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী রজত দে-র।প্রথম থেকেই এই মৃত্যু নিয়ে রহস্য দানা বাঁধে মৃতের পরিবার ও আইনজীবী বন্ধুদের মধ্যে।তাঁরা খুনের অভিযোগে সরব হন। যদিও দেহ উদ্ধারের পর রজতের আইনজীবী স্ত্রী দাবি করেন এটি আত্মহত্যার ঘটনা।এরপর,মৃতের বাবা সমীর দে-র অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অনিন্দিতাকে গ্রেপ্তার করে।পুলিশি জেরায় শেষ পর্যন্ত খুনের কথা কবুল করে সে।তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে উঠে আসে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ধৃত অনিন্দিতার হোয়াটসঅ্যাপ
গুগল সার্চ করে বিয়ে নিয়ে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে আসে পুলিশের।




তদন্তকারী অফিসারেরা জানতে পারেন,রজতের সঙ্গে দাম্পত্য কলহ চলছিল অনিন্দিতার।বিয়েতে অখুশি ছিল সে।রজতের কাছ থেকে ডিভোর্স চাইছিল অনিন্দিতা।কিন্তু ছেলের কথা ভেবে তাতে রাজি ছিল না রজত।বিয়ের বিষয়ে নিজের হোয়াটসঅ্যাপে বেশকিছু বিদ্বেষমূলক মন্তব্যও করেছিল অনিন্দিতা।সেসব তথ্য এই খুনের মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বলে জানা গেছে আদালত সূত্রে।এছাড়া ইলেকট্রনিক্স এভিডেন্স
পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমানও গুরুত্বপূর্ণ দিক এই মামলার ক্ষেত্রে।এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের উপর ভিত্তি করেই স্বামী খুনে দোষী অনিন্দিতার শাস্তি ঘোষণা করল বারাসত আদালত।গ্রেপ্তার হওয়ার একবছর নয় মাস ষোলো দিনের মাথায় খুনের মামলায় সাজা ঘোষণা করল ফাস্ট ট্রাক থার্ড কোর্টের বিচারক।




ফাঁসির শাস্তি না হলেও রজতের খুনের মামলায় অভিযুক্ত স্ত্রীর যাবত জীবন কারাদণ্ড হওয়ায়, প্রায় দু বছরের মাথায় ন্যায়বিচার পেল রজত দের পরিবার ও আইনজীবী বন্ধুরা।